সরিষা মধু সরিষার ফুল থেকে তৈরি হয়। এর স্বাদ, গন্ধ দেখে পার্থক্য করা যায়। এই মধুটি ঘন, রংও গাঢ়। সরিষা মধুতে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, ভিটামিন এবং খনিজ পদার্থের উচ্চ পরিমাণ থাকে। এটি শ্বাসযন্ত্রের সমস্যা, হৃদ্রোগ এবং ক্যান্সারের ঝুঁকি কমাতে সাহায্য করতে পারে।
সরিষা মধুর কিছু স্বাস্থ্য উপকারিতা হল:
- শ্বাসযন্ত্রের সমস্যা কমায়: সরিষা মধুতে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট এবং অ্যান্টি-ইনফ্ল্যামেটরি উপাদান রয়েছে যা শ্বাসযন্ত্রের সমস্যা যেমন অ্যালার্জি, হাঁপানি এবং ব্রংকাইটিস নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে।
- হৃদরোগ ও ক্যান্সারের ঝুঁকি কমায়: সরিষা মধুতে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট এবং ফ্ল্যাভোনয়েড রয়েছে যা ক্যান্সার ও হৃদরোগের ঝুঁকি কমাতে সাহায্য করে।
- ত্বক এবং চুলের যত্ন করে: সরিষা মধুতে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট এবং অ্যান্টি-ইনফ্ল্যামেটরি উপাদান রয়েছে যা ত্বক এবং চুলের যত্নে সহায়ক।
এটি ত্বক ও চুলের যত্নেও ব্যবহার করা যায়। সরিষা মধুকে সরাসরি খাওয়া যায়, এছাড়া খাবার বা পানীয়তে যোগ করে খাওয়া যায়। দুধ, দই, শস্যের ব্রেকফাস্ট, সালাদ ড্রেসিং, সস এবং অন্যান্য খাবার তৈরিতে ব্যবহার করা যায়। সরিষা মধুকে চা, কফি এবং অন্যান্য পানীয়তেও যোগ করা যায়। চিনির স্বাস্থ্যকর বিকল্প হিসেবে এর জুড়ি নেই।
সরিষা মধুকে ত্বক এবং চুলের যত্নেও ব্যবহার করা যেতে পারে। এটিকে ত্বকের ব্রণ, ফুসকুড়ি এবং অন্যান্য সমস্যার চিকিৎসায় ব্যবহার করা যায়। চুলের শুষ্কতা, রুক্ষতা এবং অন্যান্য সমস্যার চিকিৎসায়ও ব্যবহার করা যায়।
সরিষা মধু একটি স্বাস্থ্যকর, মজাদার ও পুষ্টিকর খাদ্য। এর বহুবিধ স্বাস্থ্য উপকারিতা রয়েছে।
জেনে রাখা ভালো, সরিষা মধু ঠান্ডা পড়লে জমে যায়, রোদে দিলে বা গরম পানিতে বা চুলার পাশে মধুর বয়াম রাখলে আবার গলে যায়। অনেকে এভাবে ক্রিমের মতই খায়, অনেকে গলিয়ে খায়। দুই অবস্থার দুই স্বাদ। সরিষা মধুকে ‘ক্রিম হানি বা ক্রিম মধু, ক্রিস্টাইলজড মধু, জমে যাওয়া মধু… ইত্যাদি বলে। সরিষা মধু সবচেয়ে দ্রুত জমে। অন্যান্য মধুও জমে, তবে সময় লাগে।
সরিষা মধু জমে যাওয়ার কয়েকটি কারণ রয়েছে –
- তাপমাত্রা: সরিষা মধু একটি ঘন, গাঢ় রঙের মধু যা সাধারণত শীতকালে জমে যায়। এটি কারণ সরিষা মধুতে উচ্চ মাত্রার গ্লুকোজ থাকে যা শীতকালে জমে যায়।
- আর্দ্রতা: সরিষা মধুতে উচ্চ মাত্রার আর্দ্রতা থাকলে এটি জমে যেতে পারে। এটি কারণ আর্দ্রতা মধুকে ঘন করে তোলে এবং এটিকে জমতে সহায়তা করে।
- পরিবেশ: সরিষা মধুকে যদি শীতল পরিবেশে সংরক্ষণ করা হয় তবে এটি জমে যেতে পারে। এটি কারণ শীতল পরিবেশে মধুর গলনাঙ্ক কমে যায় এবং এটিকে জমতে সহায়তা করে।
- মধুর বয়স: পুরানো মধু নতুন মধুর চেয়ে জমে যাওয়ার সম্ভাবনা বেশি। এটি কারণ পুরানো মধুতে গ্লুকোজ জমাট বাঁধতে পারে এবং এটিকে জমতে সহায়তা করতে পারে।
সরিষা মধু জমে গেলে এটিকে গরম করে আবার তরল করা যেতে পারে। এটি করার জন্য, আপনি মধুর পাত্রটিকে গরম পানির মধ্যে বা রোদে রাখতে পারেন, আবার মাইক্রোওয়েভেও অল্প সময় গরম করতে পারেন। তবে, মধুকে খুব বেশি গরম করা উচিত নয়, কারণ এতে মধুর স্বাদ এবং পুষ্টিগুণ নষ্ট হতে পারে।