কস্টাস/কুস্ত এর উপকারিতা
১. কুস্ত/কুড়/কুঠ এর মাঝে আছে সুসুরিন (Saussurine) নামক উপক্ষার। এর মাংশপেশী শিথিলকারক গুণ রয়েছে, যার ফলে শ্বাসপ্রণালীর মাংসপেশীর প্রসারন ঘটে শ্বাসবেগ হ্রাস পায়, কফ নিঃসৃত হয়। এক্ষেত্রে প্রতিদিন সকালে ও বিকালে কিছু খাওয়ার পর ২৫০ মিলিগ্রাম কুস্তচূর্ণ (এক-চামচ চারভাগের একভাগ) একটু গরম পানিসহ খেলে দু’একদিনের মাঝেই কাশির উপশম হয় এবং শ্বাসকষ্টও লাঘব হয়।
২. প্রবল শ্বাসকষ্টের সময় যখন মুখ দিয়ে কোন কিছু খাওয়ানো যায় না, সে সময় কুস্ত/চূর্ণ পুড়িয়ে ধোয়া টানলে সাময়িক উপশম হয়।
৩. পর্যাপ্ত খাওয়া দাওয়া সত্তেও যারা অল্প পরিশ্রমেই দূর্বলতা অনুভব করে, কিন্তু অন্য কোন শরীরবৃত্তিক বৈকল্য ধরা পড়ে না। সে ক্ষেত্রে কুস্তচূর্ণ ৩০০ মিলিগ্রাম মাত্রায় এক কাপ দুধসহ দুবেলা কিছুদিন খেলে দূর্বলতা, শ্লেষ্মা জনিত কাশি, বুকের কষ্ট, পেটফাঁপা সবক্ষেত্রেই উপকার হয়।
৪. গায়ের রং উজ্জল ছিল কিন্তু কোন কারনে উজ্জলতা নষ্ট হয়ে যাচ্ছে বলে মনে হয়। সে ক্ষেত্রে লেবুর রসের সঙ্গে কুস্ত বেটে পানি দিয়ে পাতলা করে হলুদের মত শরীরে মুখে মাখতে হয়। দু একদিন পর পর কিছুদিন মাখলে রুক্ষতা কেটে লাবণ্য ফিরে আসে। তবে যদি যকৃতের রোগ বা কোষ্ঠকাঠিন্য বা মেয়েদের মাসিকের অসুবিধার কারনে হয়ে থাকে, তাহলে সেসবের চিকিৎসা করতে হবে।
৫. মাথায় ছোপ ছোপ ঘা (বিশেষত শিশুদের) হলে কুস্ত অল্প ভেজে নিয়ে সেগুলোকে চূর্ণ মিহি করে তিলের তেলের সঙ্গে পরিমাণ মত মিশিয়ে মাথায় লাগালে দু চার দিনের মধ্যে ঘা উপশম হয়।
৬. গাঁটে গাঁটে বাতের ব্যথায় ভাতের টক আমানি (একটু ফার্মেনেন্ট হওয়া পানি) দিয়ে কুস্ত বেটে তার সঙ্গে অল্প লবণ মিশিয়ে ব্যথা যুক্ত গাঁটে প্রলেপ দিলে যন্ত্রণা ও ব্যথা দুই-ই কমে যাবে।
৭. অনেক যায়গায় সুগন্ধি হিসেবে ধূপ/বাখুরের মত কুস্ত ব্যবহার করা হয়। এছাড়া মশার উপদ্রব থেকে বাঁচতেও এর ধোয়া ব্যবহার করা যায়।
৮. পোকা-মাকড়ের হাত থেকে গরম-জামা কাপড় রক্ষার জন্য জামা-কাপড়ের ফাঁকে ফাঁকে দু এক টুকরা (গোটা) কুস্ত রেখে দিলে পোকা-মাকড় থেকে কাপড় রক্ষা পায়।
৯. কুস্ত বাটা বেশ কিছুদিন মেহেদির মত লাগালে চুল পাকা বন্ধ হয়।
১০. কুস্ত/কস্টাস বেটে দুষিত বা পচা ক্ষতে প্রলেপ দিলে কয়েকদিনের মধ্যে ঘা শুকিয়ে যায়। **
—
১১. এছাড়া রুকইয়াহ করার সময় রাক্বিগণ জিন তাড়ানোর জন্য অলিভ অয়েলে কস্টাস মিশিয়ে তার মাঝে কিছু আয়াত পড়ে এটাকে ড্রপ হিসেবে ব্যবহার করে থাকেন।
১২. জাদু আক্রান্তদের চিকিৎসার জন্য রেচক কিংবা বিভিন্ন এন্টি-সিহর সাপ্লিমেন্টের মাঝেও কস্টাসের ব্যবহার দেখা যায়। একাধিক বিশুদ্ধ হাদিসের মাঝে এটির কথা উল্লেখ হয়েছে।
—
সংগৃহীত ও পরিমার্জিত
** সূত্রঃ লোকজন চিকিৎসায় ভেষজ উদ্ভিদ, ড. সামসুদ্দিন আহমদ।
আরও দেখতে পারেন –https://en.wikipedia.org/wiki/Dolomiaea_costus