তালমিছরির উপকারিতা
তালমিছরি হলো প্রাকৃতিকভাবে তৈরি মিষ্টি। তালমিছরিতে থাকে খাঁটি তালের রস। সর্দি-কাশি থেকে শুরু করে রক্তস্বল্পতা- অনেক অসুখ দূরে রাখে এই তালমিছরি। পেটের নানা সমস্যায় ভুগে থাকেন অনেকে। তাদের জন্যও তাল মিছরি বেশ উপকারী। এটি খেতেও বেশ সুস্বাদু। রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে আদা, গোলমরিচ, দারুচিনি, লবঙ্গ, মধু, লেবু পানি খাওয়ার পাশাপাশি প্রতিদিন তালমিছরিও খেতে পারেন। যাদের ঠান্ডা লাগার ধাত রয়েছে তাদের জন্যেও খুবই ভালো তালমিছরি।
পুষ্টিতথ্যঃ তালমিছরিতে ভিটামিন, ক্যালসিয়াম, আয়রন, জিঙ্ক, ফসফরাস। থাকে ভিটামিন বি১, বি২, বি৩, বি৬ ও বি১২। যার ফলে সর্দি-কাশি গলাব্যথা সবকিছুই উপশম করে তালমিছরি।
তালমিছরির স্বাস্থ্যগুণ—
১. তালমিছরি পানিতে গুলিয়ে হালকা গরম করে খেলে গলায় জমে থাকা কফ, শ্লেষ্মা দূর হয়। কাশি বেশি হলে এক টুকরো তালমিছরি মুখে রাখলে অথবা তুলসী পাতার রসের সঙ্গে তালমিছরি গুলিয়ে খেলে কাশি কমে যাবে।
২. বয়সের সঙ্গে সঙ্গে হাড়ের ক্ষয় বাড়ে। সেইসঙ্গে বাড়ে হাঁটু ব্যথাও। এক্ষেত্রে তালমিছরির শরবত বেশ উপকারী। তালমিছরিতে থাকা ক্যালসিয়াম-পটাশিয়াম হাড়ের জন্য খুব ভালো। অপরদিকে প্রক্রিয়াজাতকৃত সাদা চিনি হাড়ের জন্য ক্ষতিকর।
৩. অ্যানিমিয়ার সমস্যা রয়েছে যাদের, তারাও তালমিছরির শরবত খেতে পারেন। কারণ এর মধ্যে থাকা আয়রন শরীরে নতুন রক্ত তৈরিতে সাহায্য করে।
৪. তালমিছরি দৃষ্টিশক্তি ঠিক রাখতেও বিশেষ ভূমিকা পালন করে। বাদাম, মৌরি, তালমিছরি, গোলমরিচ গুঁড়া করে দুধের সঙ্গে মিশিয়ে খেলে দৃষ্টিশক্তি ভালো হয়।
৫. তালমিছরির মধ্যে থাকা গ্লাইসেমিক ইন্ডেক্সের মাত্রা ৩৫। যা রক্তে সুগারের মাত্রা বাড়ায় না। বরং নিয়ন্ত্রণে রাখে। এছাড়াও এর মধ্যে থাকে ভিটামিনও খনিজ উপাদান। তবে যাদের সুগার রয়েছে তাদের তালমিছরি কিন্তু বেশি না খাওয়াই ভালো।
৬. যেসব মায়েরা শিশুকে দুধ পান করাচ্ছেন, তারা কালোজিরা ও তালমিছরি গুঁড়া করে দুধের সঙ্গে মিশিয়ে খেলে উপকারে আসে। এমনকী রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাও বৃদ্ধি পায়।
৭. শিশুকে চিনির বদলে দুধ কিংবা সুজির সঙ্গে তালমিছরি মিশিয়ে খাওয়ান। এতে শিশুর শরীরে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা গড়ে উঠবে।
তবে প্রশ্ন থেকে যায়—ডায়াবেটিসের রোগীরাও কী তালমিছরি খেতে পারবেন নিশ্চিন্তে? কিন্তু ডায়াবেটিস রোগীদের তো কোনো মিষ্টিই খাওয়া ঠিক নয়। ফলে তালমিছরি খাওয়া তাদের জন্য ক্ষতির কারণে হয়ে দাঁড়াতে পারে। এক্ষেত্রে ডায়াবেটিসে ভোগা রোগীদের চিকিৎসকের পরামর্শ নেয়াই উচিত।